কুচবিহার রাজবংশের সন্তান ৺কুমার গজেন্দ্র নারায়ণ জুনিয়র
লেখক আবির ঘোষ
ভূতপূর্ব দেশীয় রাজ্য কুচবিহারের ১৬ নং মহারাজা হরেন্দ্র নারায়ণ ভূপের ( রাজত্বকাল :- ১৭৮৩ – ১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দ ) দ্বিতীয় পুত্র হলেন রাজকুমার মেঘেন্দ্র নারায়ণে ( জন্ম :- ১৭৯৬ খ্রিস্টাব্দ, মৃত্যু :- ১৮৩৭ খ্রিস্টাব্দ ) । এই রাজকুমার মেঘেন্দ্র নারায়ণের তৃতীয় পুত্র কুমার লক্ষীন্দ্র নারায়ণের কনিষ্ঠ পুত্র হলেন কুমার গজেন্দ্র নারায়ণ জুনিয়র। ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে কুমার গজেন্দ্র নারায়ণ ( জুনিয়র ) দেশীয় রাজ্য কুচবিহারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তৎকালীন কুচবিহার ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে দর্শন শাস্ত্র নিয়ে B.A পাশ করেন। এরপর কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি দর্শন শাস্ত্রে M.A পাশ করেন।
Kumar Gajendra Narayan junior, Coochbehar Royal Family
কুমার গজেন্দ্র নারায়ণ তাঁর জ্ঞাতি আত্মীয় তথা তৎকালীন কুচবিহার রাজ্যের ১৯ নং মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ ভূপবাহাদুরের পরামশে ইংল্যান্ডের সাইড়া সিস্টার কলেজ থেকে কৃষি ও উদ্ভিদ বিদ্যায় বিশেষ পাঠ নিয়ে দেশে ফিরে কুচবিহার রাজ্যের কৃষি ও বন বিভাগের প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন । তাঁরই তত্ত্বাবধানে কুচবিহার রাজ্যে বিভিন্ন উদ্যান স্থাপিত হয়। এরপর তিনি রাজ্যের রাজপুলিশ বিভাগের সর্বোচ্চ পদে নিযুক্ত হন।
কুমার গজেন্দ্র নারায়ণ জুনিয়র বিবাহ করেন শ্রীমতি সুভদ্রা দেবী ঈশরাণীকে।
চাকুরী থেকে অবসর নেবার পর ২২নং মহারাজা জগদ্দীপেন্দ্র নারায়ণ ভূপবাহাদুরের নাবালক কালে রাজমাতা ইন্দিরা দেবীর সভাপতিত্বে গঠিত রিজেন্সি কাউন্সিলের আমৃত্যু সদস্য ছিলেন।
কুমার গজেন্দ্র নারায়ণ জুনিয়র মৃত্যুর এক বছর আগে তাঁর সম্পত্তি সমন্ধে ৬ ই জুন ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে একটি উইল সম্পাদন করেন। তাঁর এই উইলে কিছু ভূসম্পত্তি চিন্তিত করে তাঁর নিজের বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত শ্রীশ্রী মদনমোহন ঠাকুরকে প্রদান করেন এবং মৃত্যুর পর নিষ্কর জমির উপর সুবিধা মত স্থানে একটি মন্দির নির্মাণ করে তাঁর বাড়ির মদনমোহন ঠাকুরকে স্থাপন করে , উপযুক্ত ব্রাহ্মন নিযুক্ত করে নিত্যপুজোর ও ভোগের ব্যবস্থার ইচ্ছে প্রকাশ করে যান। তিনি তৎকালীন মহারাজা জগদ্দীপেন্দ্র নারায়ণ ভূপবাহাদুরকে এই উইলের একজিকিউটার নিযুক্ত করেন।
কুমার গজেন্দ্র নারায়ণ জুনিয়র ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ৮ ই নভেম্বর পরলোক গমন করেন।
তাঁর উইলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কুচবিহার রাজ্যের দেবত্র বিভাগের তৎকালীন নায়েব আহিলকার ললিতমোহন বক্সী ( B.L ) কে সম্পত্তির প্রশাসক নিযুক্ত হন এবং তিনি উইলের প্রবেট নিয়ে উইল মোতাবেক সম্পত্তি বন্টন করেন এবং ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে স্বর্গীয় কুমার গজেন্দ্র নারায়ণ সিনিয়রের বসতবাড়ির সামনে নিষ্কর জমির উপর মন্দির নির্মাণ করে কুমার সাহেবের বাড়ি থেকে শ্রীশ্রী মদনমোহন বিগ্রহ সহ অন্যান্য বিগ্রহ মন্দিরে এনে নিত্য পুজোর ব্যবস্থা করেন।
তথ্যসূত্র :- cooch4 – Royal Ark এবং
” কুমার গজেন্দ্র নারায়ণ ” ঠাকুরবাড়ির ইতিহাস ( কুমার গজেন্দ্র নারায়ণ দেবত্র এস্টেটের পক্ষে প্রশাসক কর্তৃক প্রকাশিত পুস্তক ১১/১১/২০১৯ )
কুমার গজেন্দ্র নারায়ণ ( জুনিয়র ) ছবিটি প্রাপ্ত :- “
কুমার গজেন্দ্র নারায়ণ ” ঠাকুরবাড়ির ইতিহাস ( কুমার গজেন্দ্র নারায়ণ দেবত্র এস্টেটের পক্ষে প্রশাসক কর্তৃক প্রকাশিত পুস্তক ১১/১১/২০১৯ )
এবং কুমার সাহেবের ঠাকুরবাড়ির মদনমোহন ঠাকুরের ছবিটি আমার তোলা।
আর কুমার গজেন্দ্র নারায়ণ ঠাকুরবাড়ির নহবতখানার ছবিটি দিয়েছেন Kumar Supriyo Narayan দাদাভাই।
লিখেছেন : আবির ঘোষ (FB Post)