চতুর্থ লহরী
[ রাজপুরী নির্মাণ ]
[৫ম লহরী]
[ষষ্ঠ লহরী]
কার্তিকের পঞ্চদিনে চণ্ডীবর উপসনে
অভিসেক করে বিপ্রগণ।
শুরু পক্ষ দ্বিতীয়ার তারা চন্দ্র সুদ্ধ যার
প্রীতি যোগ তাহে উপসন ॥ ১৯১
বানিজ করেন যার গুরু দৃষ্টে গুরুবার
কার্তিকের চন্দ্রে রাজা হৈল।
নারীগণ উলাউলি ভাটে দেয় করতালি
কান্তেশ্বর পাটত্ বসিল ॥ ১৯২
ঘট গছা সারি সারি কদলী পতকা গাড়ি
নানা বাদ্য কোলাহল হৈল।
অঙ্গনা আনন্দ হৈল তার পুরে প্রবেশিল
চণ্ডীবরে বাঞ্ছা সিদ্ধি হৈল ॥ ১৯৩
করহ চণ্ডীর পুজা সুখে রবে যত প্রজা
চণ্ডীবরে লক্ষ্মী চঞ্চল।
হরি পরসন হয় কবি রাধাকৃষ্ণ কয়
সুমধুর গোসানী মঙ্গল ॥ ১৯৪
[ সপ্তম লহরী ]
তিন দণ্ড বেলি মধ্যে কান্তেশ্বর রাজা
চণ্ডীবরে যত লোক সবে হৈল প্রজা ॥
কৈলাসে থাকিয়া চণ্ডী হুঙ্কার করিল
হস্তী ঘোড়া সৈন্য সেনা আচম্বিতে হৈল ॥ ১৯৫ অশ্বসালে বান্ধা আছে হাজার তুরঙ্গ।
মাহুত সহিতে আর শতেক মাতঙ্গ ॥
বিশ্বকর্মা নির্মাইল যত অস্ত্রগণ ।
সৈন্যগণ ধরি তাহা করিছে কামান ॥ ১৯৬
নানা দেশ হৈতে কত চাকুরিয়া আইল ।
ঘরে ঘরে আসি সবে বাসা করি রৈল॥
সাখারী কাঁসারী কাইঞা যত মহাজন।
দুয়ারে আসিয়া সবে ধরিয়া দোকান।। ১৯৭
ব্রাহ্মণ সন্নাসী কত অতিথি আইল।
ধর্ম্মশালা ঘরে আসি সবে বাসা কৈল ॥
য়েই মতে কান্তেশ্বর রাজধানী হৈল।
আপন গৃহত্ শশী জাগিয়া উঠিল ॥ ১৯৮
শ্রীদূর্গা বলিয়া শশী ভাবে মনে মন।
পাত্র হৈব চন্ডী করইল স্বপন।।
জামবাড়ী নগরে রাজা হইল কান্তেশ্বর ।
তাহার দেওয়ান আমি চন্ডী দিল বর।। ১৯৯
স্নান দান করি শশী করিল গমন
য়েক খানি ঝারি হাতে দ্বারে উপসন ॥
বিপ্রক প্রণাম করি রাজাক বন্দিল।
কোথা হৈতে আইলা তুমি রাজা জিজ্ঞাসিল।। ২০০
শশী কহে নিরেদন রাজা কান্তেশ্বর।
মহা ধার্মিক তুমি ধর্ম কলেবর ॥
চণ্ডীর আদেশে পাত্র হৈল তোমার।
নাম মোর শশিবর আইল তব দ্বার ॥ ২০১
শুনি রাজা কান্তেশ্বর আনন্দ হইল
সেইক্ষণ শশিবরক্ দেওয়ান করিল ॥
আজ্ঞা করিল রাজা শুন শশিবর
শীঘ্রে সন্দেস আন ভবাণী পুজার ॥ ২০২
আদেশ পাইয়া শশী মহানন্দ মন।
লোকজন সঙ্গে করি আনে আয়োজন।।
আতর্প কদলী চিনি বেলাদি শ্রীফল।
জবাফুল আমলকী আনিল সকল ॥ ২০৩
চণ্ডী পুজার মঠ কর্মী বান্ধি ছিল।
সেই মঠে আয়োজন সকলি রাখিল ॥
রাজগুরু স্নান কৈল শুক্র দ্বিজবরে।
কুশাসনে বসি দ্বিজ চণ্ডী পুজা করে ॥ ২০৪
গনেশাদি পঞ্চদেব করিল পূজন।
নানা বাদ্য কোলাহল ঘণ্টা ঠন ঠন ॥
চণ্ডী মণ্ডপে রাজা আইল শীঘ্র গতি।
গলায় বসন বান্দি রাজা করে স্তুতি॥ ২০৫
ছাগ মহিষ কাটি করিল পূজন।
মহা মহোৎচ্ছবে পূজা কৈল সমাধান ॥
প্রসাদ নির্মাল্য আদি দিল দ্বিজবর।
নির্মাল্য ধারন কৈল মস্তক উপর ॥ ২০৬
ধর্মশালায় আছে সন্নাসী ব্রাহ্মণ।
দক্ষিণা ভুজনি দিয়া তুষিলেন মন ॥
ঘরেতে অঙ্গনা মায় করিছে রন্ধন।
যজ্ঞ অবশেষে রাজা করিল ভোজন ॥ ২০৭
[অঙ্গনার মৃত্যু ]
চণ্ডী বরে ধন কড়ি সকট পুরিল।
পঞ্চদিনে রাজ-পদে অঙ্গনা মরিল ॥
হাহাকার করি রাজা করিছে ক্রন্দন ।
রাজপদ দিয়া বিধি কৈল বিড়ম্বন ॥ ২০৮
বিধির বিপাকে মোর হয় য়েত দশ|।
যে করে ভবাণী মায়ের চরণ ভরষা।।
তৃণ কাষ্ঠ আনি তার করিল সংস্কার।
পিণ্ড দিলেন তার ক্ষেত্রির ব্যবহার ॥ ২০৯
দান দক্ষিণা রাজা অনেক করিল।
চণ্ডী ভাবিয়া রাজা সুস্থির হইল ॥
প্রভাতে উঠিয়া রাজা কৈল স্নান দান।
বাহির উদ্যানে কহে আন বান্যাগণ ॥ ২১০
[মোহর নির্ম্মাণ ]
হুকুম পাইল যদি শশিপত্র বর।
আনিল বনিঞা ধরি রাজার গোচর ॥
গলেত বসন বান্ধি করিল প্রণাম।
কি হুকুম কর রাজা কহে বান্যাগণ ॥ ২১১
রাজা কহে স্থির হও নাহি কোন ভয়।
মোহর কোবাও কন্যা আমার আজ্ঞায় ॥
আদেশীয়া মহারাজ পুরী মধ্যে গেল।
দুয়ারে বাণিঞাগণ হাপর পাতিল ॥ ২১২
কান্তেশ্বর নাম লেখি জাকীনি বানায়।
হাজারে হাজারে টাকা জাকীনি কোবায় ॥
সোনার মোহর বান্দে হাজারে হাজারে।
সকট পুরিল নিয়া অন্দর ভিতরে ॥ ২১৩
চণ্ডী বরে ধন জনে সকলি হইল।
রাজপাটে রাণী নাই রাজ চিন্তিল॥
রাজা ভাবে চণ্ডীকার চরণ যুগল।
ভনে কবি রাধাকান্ত গোসানী মঙ্গল ॥ ২১৪
[ কান্তেশ্বর রাজার বিবাহ ]
তৃতীয়া প্রহর রাত্রি রাজা নিদ্রা যায়।
শিয়রে বসিয়া চণ্ডী স্বপন দেখায় ॥
শুন কান্তেশ্বর বাপু আমার চন।
হৈবে তোমার বিভা কৈণ্যা পঞ্চজন।। ২১৫
স্বপ্নে কহিয়া চণ্ডী কৈলাসত্ গেল।
প্রভাত হইল রাজা জাগিয়া উঠিল ॥
সিংহাসনে বৈসে রাজা বাহির দুয়ারে
হেনকালে গঙ্গাভাট আইল রাজা দ্বারে ॥ ২১৬
ভাটে আশির্বাদ করে রাজা প্রণমিল
বিবরিয়া গঙ্গাভাট সকলি কহিল ॥
শুন রাজা কান্তেশ্বর করি নিবেদন।
বিভাহ করহ তুমি রাজ্যের পালন ॥ ২১৭
বিরলে বিনন্দ নাম প্রজা ভাগ্য-ধরে।
জন্মিয়াছে পঞ্চ কণ্যা তাহার মন্দিরে
সুকঞ্চনা অকঞ্চনা অগ্রজ সুশীলা
শশীতম মধ্যম কণিষ্ঠ বনমালা।। ২১৮
গঙ্গাভাট মুখে শুনি হরষিত রাজা।
আনন্দিত আয়গন আর যত প্রজা।।
রাজা কহে শুন ভাট করহ গমন।
যাতায়াতে শুভকার্য্য করহ ঘটন ।। ২১৯
হেন শুনি গঙ্গাভাট দিলেন উত্তর।
যেইখানে আসিয়াছে তোমার শ্বশুর।।
য়েত বলি গঙ্গাভাট বিনন্দক কয়
হাত জোর করি বিনন্দ রাজসভা যায় ॥ ২২০
বিনন্দ কহে রাজা কর অবধান।
বিবাহ কর মোর কৈন্যা পঞ্চজন ॥
রাজ কহে পত্র লেখি দেহ দ্বিজবরে
কৈনা দান হেন কথা পুন নাই নড়ে ॥ ২২১
পাত্রমিত্র সভাকরি আছে সর্বজন ।
সেই স্থানে গঙ্গাভাট লেখে পত্রখান ॥
য়েই মতে সেই স্থানে লগ্নপত্র হইল।
করহ বিবাহ কার্য্য রাজা আজ্ঞা দিল ॥ ২২২
ঘরে ঘরে সমঙ্গল করহ প্রজাগণ।
বিবাহর করহ সজ্জা যত আয়োজন ॥
রাজ আজ্ঞা পাঞা পাত্র শীঘ্র গতি চলে।
প্রজাগণ ধাঞা গেল আপন মহলে ॥ ২২৩
চিড়া চাউল খড়ি পাত আনে ভারে ভারে।
হাড়ি পাতিল আনি ভরে রাজদ্বারে ॥
দধি দুগ্ধ ঘৃত চিনি যতেক সম্ভার ।
কদলী শ্রীফল আনে যত ইতি আর ॥ ২২৪
গুয়া পান পুষ্পমাল্য বস্ত্র আভরণ।
সুসজ্জা করিল আনি যত প্রজাগণ ॥
গুরু পুরহিত আদি যতেক ব্রাহ্মণ।
সকলে আইল দ্বারে পাইয়া নিমন্ত্রণ ॥ ২২৫
প্রথমে চণ্ডীর পূজা করিলেন রাজা।
নানা বাদ্য জয় জয় আনন্দিত প্রজা ॥
চণ্ডী পাঠ হোম করি পূজা বিসজ্জিল।
ধর্মসালায় অতিথির সেবা ভক্তি কৈল ॥ ২২৬
(ক্রমশ…… Please follow this website)
# Bholanather dighi # shitalabas # shilkhuri
# Gosani Mangal # Rajpuri nirman # Kodaldhoa dighi
# Kamtapur Rajpat # Chandi thakur # Raja Kanteshwar