"নাটাবাড়ি" ও "ভাটিবাড়ি" নামের উৎপত্তি - by K SARKAR
REFERENCE BOOK:- “DISCOVERY OF KAMTAPUR” (SOCIETY, CULTURE, MUSIC, LINGUISTIC, RELIGION) By KANAK SARKAR, RAJLAKSHMI PUBLISHER, JADAVPUR, KOLKATA (Copy Right Reserved)
বৃহত্তর কোচবিহার অঞ্চলে “বাড়ি” দিয়ে প্রচুর গ্রাম নাম পাওয়া যায়। বাড়ি অর্থে বিস্তার ও সেই জিনিসের প্রাচুর্য্য বোঝায়। যেমন নলবাড়ি, খাগড়াবাড়ি, কাশিয়াবাড়ি, নাটাবাড়ি, ভাটিবাড়ি, খেড়বাড়ি, শুক্টাবাড়ি, প্রভৃতি।
নল ও খাগড়া এক প্রকার বড়ো ঘাস জাতীয় উদ্ভিদ। যেখানে এর বিস্তার সেখানে এরকম নাম হয়েছে। কাশিয়া ও এলুয়া-খেড় প্রচুর জন্মে সেখানে এরকম কাশিয়াবাড়ি ও খেড়বাড়ি নাম হয়েছে। শুঁটকী মাছ (DRY FISH) থেকে শুকটা বাড়ি নাম।
ভাটি গাছ এক প্রকার ঔষধি গুণ সম্পন্ন উদ্ভিদ। এর কচিপাতা কৃমি নাশক হিসেবে খাওয়ানো হয় । ভাটি গাছের প্রাচুর্য্য থাকায় এলাকার নাম হয় ভাটিবাড়ি।
তেমনি নাটাজিরা গাছ, যার কাণ্ড টুকরো করে সুতো দিয়ে মালা তৈরি করে জন্ডিস বা কুমলি রোগীর গলায় পরিয়ে দেওয়া হয়, কবিরাজি মতে। উল্লেযোগ্য যে এই নাটাজিরা গাছের টুকরো কাণ্ড গুলি শুকিয়ে গেলে মালাটা আকারে বড় হতে থাকে ও তিন গুণ বড় হয়ে যায়। কবিরাজি বিশ্বাস যে জন্ডিস বা কূমলি রোগ টেনে নিয়ে এই মালা আকারে বড় হতে থাকে।
স্থানীয় লোকের থেকে তথ্য বিশ্লেষণ করে জানা গেছে যে নাটাবাড়ি উচুঁ জায়গা, বন্যার জল ওঠে না। তাই সেখানে এই নাটাজিরা গাছের প্রাচুর্য্য। সেখান থেকে নাটাবাড়ি নামের উৎপত্তি।
শাল গাছের আধিক্য থেকে এসেছে শালবাড়ি নাম। হলুদ বা হলদি গাছের প্রাধান্য থেকে এসেছে মেখলিগঞ্জের নিকটে হলদিবাড়ি গ্রাম। তার পাশেই কুচলি বা কোচলত গাছের আধিক্য থেকে হয়েছে কুচলিবাড়ি নাম। হলদি গাছের মতোই দেখতে এ গাছের কন্দ কচলে এরারুট তৈরী হয় বলে রাজবংশীরা বলে কুচলি বা কোচলত। আর এক মতে কচলা ঘাস এর আধিক্য ছিল, তা থেকেও কুচলিবাড়ি নামের উৎপত্তি হয়ে থাকতে পারে।

