ধাপ চন্ডী মন্দির এর ইতিহাস, জলপাইগুড়ি / Dhap Chandi Thakur
জলপাইগুড়ি শহরের পাঁচ মাইল (8km) দক্ষিণে, পাঙ্গা নদীর উত্তর-পূর্ব তীরে, জলপাইগুড়ি থেকে হলদিবাড়ি যাবার বড় রাস্তার পাশে একটা মাটির ঢিবি আছে। ধাপগঞ্জ হাটের কাছে বামনপাড়া গ্রামে এটি অবস্থিত, সেই জায়গায় ধাপ কণ্ডি বা চণ্ডী (Dhap Chandi Thakur) দেবী কালীরূপে পূজিত হন। কথিত আছে, হোসেন শাহ বৈকুণ্ঠপুর আক্রমণের সময়, মুসলমানরা মন্দিরটি ধ্বংস করেছিলেন। তখন থেকে জায়গাটি পরিত্যক্ত, জঙ্গলে পরিপূর্ণ এবং কাছে-পিঠে কোনও লোকবসতি ছিল না। অনেক দিন পর একটি মুসলমান পরিবার বামন পাড়ায় থাকতে আসেন।
কামতা সংস্কৃতি ও ধাপগঞ্জ ধাপ চন্ডী ঠাকুর
শোনা যায়, পরিবারের সর্ব বয়োজ্যেষ্ঠ জন স্বপ্ন দেখেন সেখানে মা কালী আছেন। বৃদ্ধ মানুষটি স্বপ্নের নির্দেশ অনুযায়ী সেই জায়গাটি আবিষ্কার করেন। জঙ্গল পরিষ্কার করে প্রতিদিন সন্ধ্যায় একটা করে প্রদীপ জ্বালিয়ে দেন। তিন পুরুষ ধরে এই রীতি বজায় ছিল। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের ফলে জেলা বিভক্ত হলে, পরিবারটি গ্রাম ত্যাগ করে। দেবীও দীর্ঘদিন ধরে অবহেলায় পড়ে থাকেন। ১৯৫৫ সালে বড় রাস্তা নতুন করে তৈরি হয়। এই কাজের ঠিকাদার শ্রী এস সারাফ ডঃ চারুচন্দ্র সান্যাল মহাশয়কে জানিয়েছেন যে কাজ চলাকালীন, জলপাইগুড়ি শহরে বসবাসকারী তার বাবা স্বপ্ন দেখেন যে ধাপগঞ্জ এর ঢিপির নীচে কালীমন্দির আছে। ঢিপিটা যেন খোঁড়াখুঁড়ি না করা হয়। একথা শুনে শ্রী সরাফ ঢিপির ওপর একটা ছোট মন্দির তৈরি করে, প্রতি সন্ধ্যায় মন্দিরের সামনে কয়েকটি প্রদীপ জ্বালাবার ব্যবস্থা করেন। সেই নিয়ম আজও চলছে। ঢিপিটা বাঁচাবার জন্য রাস্তাটিকে একটু নিচু করা হয়েছে। স্থানটি খননের অপেক্ষায় আছে। বেশ কয়েকবার এখানে গিয়ে ডঃ সান্যাল মাটির নীচে পুরনো ইট দেখতে পেয়েছেন।
জানা গেছে, সুদূর কোন অতীতে মন্দির রক্ষণাবেক্ষণ এবং মূর্তি পূজার খরচ চালাবার জন্য গ্রামের এই অংশটি ব্রাহ্মণদের জন্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। তাই এর নাম বামনপাড়া।
# Kamata Devdevi # Kamatapedia #Kamatablog # Koch Rajbanshi Culture #Dhap Chandi Thakur, Dhapganj
Courtesy: The Rajbanshis of North Bengal by Dr. C.C. Sanyal