গিরির আদ্দাশ, কামতাপুরী কবিতা - পণ্ডিত রাজেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী - কোচবিহার।

VSarkar
0
গিরির আদ্দাশ

১৯০৫ সনত কোচবিহারের কিছু গ্রামত মারাত্মক ভাবে গরু ভৈষের মড়ক দেখা যায়। ঘটনাটা প্রকাশ পায় এ যে, একদল মুচি ঘাসের সাথত বিষ মিশি দিচিল আর সেই ঘাস খায়ায় গােরু মরি যায়। গােরুর চামড়ার লােভোতে উমরা এই কামাই করে, সেলা কলিকাতাত গােরুর চামড়ার ব্যাবসা খুবে লাভজনক। এটা হবার পায় কিছু বানিয়া উমাক এই কাজত নাগায়। সেই সমায় কোচবিহারের খাগড়াবাড়ির প্রয়াত পণ্ডিত রাজেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী (Pandit Rajendranath Chakrabarty) এই নারকীয় কাজ অতিসত্বর বন্ধ করার আবেদন জানেয়া কোচবিহারের মহারাজাক উদ্দেশ্য করি এই কবিতাখান লেখিচেন, যার যার ক্ষয় ক্ষয়ক্ষতি হৈচিল কোনো কোনো সমায় উমরা নিজের হাততে আইন তুলে নিচেন।

মহারাজা কঠোর হাতে পরিস্থিতি মােকাবিলা করেন আর খুব কম সমায়ের ভিতরা মুচিলাক দ্যাশছাড়া করেন। 
ল্যাখাখান ডঃ চারুচন্দ্র সান্যাল (Dr. Charuchandra Sanyal) মহাশয় কোচবিহারের ডি. ভট্টাচার্য বাবুর নিকট হৈতে সংগ্রহ করিচিলেন আর উমার বই “The Rajbanshis of Northbengal” বই ওত লিপিবদ্ধ করিচিলেন। 

কবিতাখানত ভালে কয়টা বানান ভুল ছিল যা পড়ার সমায় মুই বুঝির পাচুং যেমন “দ্যাখোৎ ঢুরকী মারি” আসলে “দ্যাখোং ঢুরকী মারি” হৈবে। ঐলা ঠিক করি ল্যাখার চেষ্টা করা হৈচে মোটামুটি কামতাপুরী /রাজবংশী ভাষা জানং দেখি। 

গিরির আদ্দাশ (Girir Addash)

গাই বাচুর বলদ গােরু, মােটা সােরু আচিল, মাের ছয় কুড়ি

নিজ হাতি হাল ছয় খান, আরাে দশ খান, চইলেছে আধিয়ারী,

গাই এর দুধ কলসী সাতেক, দৈ পাতেক, দুধ খা ধাকুড়ি,

য্যালা যার ছাওয়ার দুধ নাই, ধােরিয়া হাইফাই, দৌড়ি আইসে মাের বাড়ি।

দৈ দুধ কতাে খিলাচু, কতাে ব্যাচাচু, নাই তার লেখা জোকা,

আচিনু আজার হালে, এমােন কালে, মনােৎ পৈল মাের ধােকা।

দুই ব্যাটা বুড়া মুচিয়ার, বড়াে হুঁসিয়ার চালাৎ চুলুৎ দ্যাখে,

কতাে কয় ফাসার ফুসুর, হাটে তুরবুর, ঘাসােৎ বা কি মাকে।

কোপালােৎ শনি কি না, গাওয়া নুই না, কামাইৎ বুলি গেনু,

সাজের ব্যালা বাড়ি আইসিয়া, ভরি হাত ধুইয়া, হানু দানু নিন্ গেনু।

ঝেচু কয় ‘ড্যাকেয়া তােলেক, ড্যাকেয়া তােলেক, গােয়ালিৎ ক্যানে সারী’?

চোক মুক ঘােচলে যায়, হোক ফোকেয়া, দ্যাখােং ঢুরকী মারি।

মাতাত্ যােনে চরক পড়িল, কোইলজা ছিরিল, ডাঙ্গে ভাঙ্গিল, ছয় ছড়োৎ

গােয়াইল ঘর শাশান পুরী, হায় কি কোরি, গােরুক ধচ্চে মরােক।

গরু মাের নাল, ধওলা, মাটিয়া, কালা, মুগা পাকেড়া কাহাে,

কাঁহাে হাগে ড্যাব ড্যাবেয়া, ধর ফরেয়া, চিক্রি ওটে কাঁহাে।

মরে গােরু শুঙারী শিঙা, হ্যালা শিঙা, খাড়া শিঙা আর ফ্যাতা,

মেণী গাই চিৎ কাপালে, পালে পালে, মােরিয়া হৈল খ্যাত খ্যাতা।

কাঁদোন মাের ব্যাংসোেসারী, সগায় বাড়ি, উটিল কানদোনের সাড়া,

বুড়া মা টা, চ্যাংরা, গাবুর, মাটিৎ উবুর, চোক বয়া বয় ধারা।

মরা গােরু হােইলেক ফ্যালা, চামার ম্যালা, গােরু ছালেবার আসিল্,

গিদ্ধিণী, শকুন, চিলা, কাউয়া, হাড়গিলা, শিয়াল, কুকুরে রুষিল্।

চামারের হাতােৎ ডান্ডা, ল্যাংল্যাংআ, দাও কাটারি দড়ি,

তারপরে মুচির দলে, শকুন, শিয়ালে, লাগিল হুড়াহুড়ি।

আনােরে গাটিয়া নাটি, আনােরে গাটিয়া নাটি, উজান ভাটি,

বিচার নাই আর কোনাে,

মুচিক ডাং মার কষিয়া, হাত তুলিয়া, ডাইন বাঁও হাত দোনাে ৷

ব্যাটার ঘর ভাল তো নােয়ায়, দাওয়া খোয়ায় গরুক মারিবার বাদে। 

শুনি মাের চোকমা কাথা, যতােক ব্যাটা, কাপড়ে চোপড়ে নাদে,

কাহাের ফাটিল্ মাতা, বান্দিল খ্যাতা, ত্যাজ ধোরানীর বাদে,

কারাে হােইল ঠ্যাং ডেঙ্গুরা, ড্যানা নুলা, পার হােইল ফাঁসীর ঘাটে।

আরও এক কাতা আছে, নােকের কাছে কোইতে অপমান,

মরা গােরুর টারুয়া গুলা, যতেক শালা, করিয়া দেয় চালান।

ঐ এক মস্ত পাপে, গােরুর শাপে, খ্যাতােৎ ফলে না ধান,

পরজা বা প্যাটে কি খায়, আজা কি দ্যায়, মানে না মােহাজন।


# The poem “Girir Addash” Witten by Kamtapuri poet Pandit Rajendranath Chakrabarty of kochbihar Khagrabari in 1905. This poem is penned to highlight mishappening with domestic cattle by some dishonest animal skin smuggler so that Coochbehar Maharaja get to know. 

Post a Comment

0Comments

Post a Comment (0)