কুচবিহার রাজ্যের রাজকুমার
লেখক: কুমার মৃদুল নারায়ণ
ঐতিহাসিকগণ কোনো রাজ্য বা রাষ্ট্রের ইতিহাস লিখতে গিয়ে কেবলমাত্র রাজা-মহারাজাদের কথাই় জনসমক্ষে তুলে ধরেন, কিন্তু রাজা-মহারাজাদের এই সাফল্যের পথে অনেক ক্ষেত্রেই রাজকুমারদের বিশেষ ভূমিকা থাকে। কুচবিহার রাজ পরিবারের সাহিত্য, সংস্কৃতি, ক্রীড়াচর্চার অন্যতম সার্থক পুরুষ মহারাজকুমার নিত্যেন্দ্র নারায়ন (Maharajkumar Nityendra Narayan) ও মহারাজকুমার হিতেন্দ্র নারায়ণ (Maharajkumar Hitendra Narayan)। কুচবিহারের ঐতিহ্য সংরক্ষণে মহারাজকুমারগন (Rajkumars of Coochbehar) ছিলেন সক্রিয়, কুচবিহার রাজকুমারদের অবদান চিরস্মরণীয়। এ কারণেই তারা রাজ্যের বিদ্যোৎসমাজের আপনজন ছিলেন। কুচবিহার রাজ্যের প্রশাসনিক, সাংস্কৃতিক ও রাজ্যবাসীর প্রতি মহারাজকুমারগনদের অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ ও মহারানী সুনীতি দেবীর চারজন পুত্র ও তিনজন কন্যা ছিলেন। প্রথম দুই পুত্র রাজরাজেন্দ্রনারায়ণ (Rajrajendra Narayan) এবং জিতেন্দ্র নারায়ণ (Jitendra Narayan) কুচবিহার রাজ সিংহাসনের অধিকারী ছিলেন। তৃতীয় এবং চতুর্থ পুত্র মহারাজকুমার ভিক্টর নিত্যেন্দ্র নারায়ণ ও মহারাজকুমার হিতেন্দ্রনারায়ণ রাজ সিংহাসনে উপবিষ্ট না হয়েও প্রজা কল্যাণের স্বার্থে তাদের অবদান ভোলার নয়। সুকৃতি দেবী, প্রতিভা দেবী এবং সুধীরা দেবী মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ এর কন্যা ছিলেন।
মহারাজকুমার ভিক্টর নিত্যেন্দ্র নারায়ণ / MahaRajkumar Victor Nityendra Narayan
মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ এবং সুনীতি দেবীর তৃতীয় পুত্র নিত্যেন্দ্র নারায়ণ কলকাতার উডল্যান্ডস জন্মগ্রহণ করেন ১৮৮৮ খ্রিস্টাব্দের ২১শে মে। মহারানী ভিক্টোরিয়া তার ধর্মমাতা ছিলেন বলে তিনি ভিক্টর নিত্যেন্দ্র নারায়ণ নামে পরিচিতি লাভ করেছিলেন। দার্জিলিংয়ের সেন্ট পলস স্কুলের প্রারম্ভিক শিক্ষার পর তিনি ইংল্যান্ডে চলে যান। সেখানে ফার্নবরো এবং ইটন স্কুলেও শিক্ষা লাভ করেন। ভারতে প্রত্যাবর্তনের পর দেরাদুনের ইম্পেরিয়াল ক্যাডেট কোর থেকে সামরিক শিক্ষা গ্রহণ করেন এবং পরে কৃষি বিজ্ঞানে বিশেষ প্রশিক্ষণ লাভ করেন। কৃষি বিশারদ হিসেবে তার যথেষ্ট সুনাম ছিল। ১৯০৭-০৮ খ্রিস্টাব্দে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় কৃষি বিষয়ক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
মহারাজকুমার সরলপ্রাণ, উদার হৃদয় এবং মহানুভব ব্যক্তি ছিলেন। কুচবিহারবাসীর প্রতি তার গভীর স্নেহ এবং সহানুভূতি ছিল। কুচবিহার ছিল তার অন্তপ্রাণ। তার বহু নিদর্শন পাওয়া গেছে তার চিঠিপত্র ও কার্যকলাপে। তিনি রসিক প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। কুচবিহারের শিক্ষা এবং সংস্কৃতি জগতে তাঁর অবদান ভোলার নয়। ভিক্টর নিত্যেন্দ্র নারায়ণ পরপর তিনজন রাজার রাজত্বকালে রাজ্যের শাসন ব্যবস্থার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। মহারাজা রাজরাজেন্দ্রনারায়ণ, মহারাজা জিতেন্দ্র নারায়ণ এবং মহারাজের জগদ্দীপেন্দ্র নারায়ণ এর শাসনকালে রাজকার্যে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতেন। তিনি ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দ থেকে কুচবিহার স্টেট কাউন্সিলের আমৃত্যু সদস্য ছিলেন। মহারাজা জিতেন্দ্র নারায়ণের মিলিটারি সচিবও ছিলেন।
মহারাজকুমার খেলাধুলায় পারদর্শী ছিলেন। ভালো ক্রিকেটার ছিলেন। ২৪/২/১৯৯১ খ্রিস্টাব্দে “দি স্টেটসম্যান” পত্রিকায় কলকাতার় একটি প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট ম্যাচের বিবরণ পাওয়া যায়। ভিক্টর নিত্যেন্দ্র নারায়ণ ছিলেন কুচবিহার দলের অধিনায়ক। রাজকুমারের নেতৃত্বে গভর্নাস একাদশকে ইনিংস এবং ১৭ রানে পরাজিত করে কুচবিহার একাদশ।
See Images of Rajkumars
মহারাজকুমার ভিক্টর নিত্যেন্দ্র নারায়ণের সক্রিয় সহযোগিতায় এবং মহারাজা জিতেন্দ্র নারায়ণ ভুপবাহাদুর ও মহারানী ইন্দিরা দেবীর উৎসাহ ও আনুকূল্যে সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চার জন্য কুচবিহার রাজ্য “কুচবিহার সাহিত্য সভা”নামে একটি সারস্বত প্রতিষ্ঠান জন্ম লাভ করে ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দে। মহারাজকুমার এই প্রতিষ্ঠানের প্রথম সভাপতি ছিলেন এবং তিনি ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত দীর্ঘকাল এই পদে ছিলেন। এছাড়াও মহারাজকুমার হিতেন্দ্র নারায়ণ ছিলেন এই প্রতিষ্ঠান সহ-সভাপতি। কুচবিহারের প্রাচীন সম্পদ উদ্ধার, সংরক্ষণ, প্রকাশ ইত্যাদি ছিল এই প্রতিষ্ঠানের মুখ্য উদ্দেশ্য। অনেক পথ পেরিয়ে এই প্রতিষ্ঠানটি আজও পাঠক গবেষকের কাছে প্রেরণাকেন্দ্র। কুচবিহারের ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রেও ভিক্টর নিত্যেন্দ্র নারায়ণের উৎসাহ দান এবং ভূমিকার কথা স্বীকার করতেই হয়। উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় গ্রন্থাগারে তার সংগৃহীত গ্রন্থতালিকা দেখে তার গ্রন্থপ্রেমের নিদর্শন পাওয়া যায়। এখানে তাঁর গ্রন্থসম্ভারের একটি তালিকা রয়েছে।
কুচবিহারের রূপকার মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণের আনুকূল্যে বৈরাগী দিঘীর দক্ষিণ-পূর্ব কোণে ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দে ১৬ এপ্রিল কোচবিহার ক্লাব গঠিত হয়। মহারাজকুমার নিত্যেন্দ্র নারায়ণ ছিলেন এই ক্লাবের তৃতীয় সভাপতি। তিনি ১৯১৫-১৯৩২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এই পদে ছিলেন। সেইসঙ্গে মহারাজকুমার হিতেন্দ্র নারায়ণ ছিলেন কোচবিহার ক্লাবের সহ-সভাপতি। এখানে বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হতো। এই সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলিতে মহারাজাদের পৃষ্ঠপোষকতার সঙ্গে সঙ্গে রাজকুমারগণের প্রজা সম্পর্ক এবং উৎসাহ দানের কথা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে মহারাজকুমার নিত্যেন্দ্র নারায়ণের সম্পাদনায় তার গৃহশিক্ষক ইন্দুভূষণ মজুমদার “America through Hindu Eyes” বইখানি প্রকাশ করেন। এই গ্রন্থে মহারাজকুমারের সম্পাদকীয় মন্তব্যে তার সাহিত্য ভাবনার বলিষ্ঠ উদাহরণ পাওয়া যায়।
সাহিত্যিক নিরুপমা দেবীর সঙ্গে মহারাজকুমারের বিবাহ হয় ১৯১১-১২ খ্রিস্টাব্দে। তাদের দুটি পুত্র সন্তান ছিল। নিধিন্দ্র নারায়ণ (নিধি) ও গৌতম নারায়ণ। তবে তাদের এই সাংসারিক জীবন বেশিদিন স্থায়ী হয়নি।
মহারাজা জগদ্দীপেন্দ্র নারায়ণের কাকা ভিক্টর নিত্যেন্দ্রনারায়ণ ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দের ৩১ অক্টোবর এক দুঃখজনক মোটর দুর্ঘটনায় ইংল্যান্ডের অস্টারলিতে নিহত হন ৪৯ বছর বয়সে। কুচবিহার গেজেটে ঘোষণা করা হয় যে, স্বর্গীয় মহারাজকুমার ভিক্টর নিত্যেন্দ্র নারায়ণের শ্রাদ্ধ শান্তি অনুষ্ঠান হয় ২৮শে ডিসেম্বর ১৯৩৭।
মহারাজকুমার হিতেন্দ্র নারায়ণ / Maharajkumar Hitendra Narayan
মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ এবং সুনীতি দেবীর কনিষ্ঠপুত্র রাজকুমার হিতেন্দ্র নারায়ণ ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দের ১জুলাই কুচবিহারে জন্মগ্রহণ করেন। রাজকুমারের আদরের ডাক নাম ছিল প্রিন্স হিতি / হিটি। নবজাতক রাজকুমারের আগমনকে স্মরণীয় রাখতে দরিদ্র প্রজাদের বিভিন্ন সামগ্রী বিতরণ করা হয় এবং প্রজাদের আনন্দদানে যাত্রা গানের অনুষ্ঠান, আতশবাজি পোড়ানো, আলোকসজ্জার ব্যাপক আয়োজন করা হয়।
অতি অল্প বয়সে হিতেন্দ্র নারায়ণ তার দাদাদের সঙ্গে ইংল্যান্ডে পড়াশোনা করতে চলে যান। প্রথমে অভিজাত স্কুল ও তারপর কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। পড়াশোনার সঙ্গে সঙ্গে রাজকুমারের ক্রিকেট চর্চা চলে সমানভাবে। ইংল্যান্ডের ক্রিকেট কাউন্টি লিগ এ অংশগ্রহণ করেছিলেন।
মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণের সুযোগ্য পুত্র মহারাজকুমার হিতেন্দ্র নারায়ণ তার বাবা এবং দাদাদের মতই প্রজানুরাগী, কর্তব্যপরায়ণ, আন্তরিক ব্যবহার, সহৃদয়তা, স্নেহবৎসল ছিলেন। কুচবিহার রাজ্যে শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতিতে তার নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। কুচবিহার সাহিত্যসভা, কুচবিহার ক্লাব এই স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে তিনি প্রশাসনিকভাবে জড়িত ছিলেন। হিতেন্দ্র নারায়ণ মহারাজা রাজ রাজেন্দ্রনারায়ণ ও মহারাজা জিতেন্দ্র নারায়ণের রাজত্বকালে রাজ্যের শাসন ব্যবস্থার সঙ্গে গভীর ভাবে যুক্ত ছিলেন। ১৯০৭-০৮ আর্থিক বছরে মহারাজকুমার রাজেন্দ্রনারায়ণ কুচবিহার সেনা বিভাগের কমান্ডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
প্রথম বিশ্ব যুদ্ধ শুরু হলে ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবর মাসে মহারাজ কুমার যুদ্ধে যোগদান করেন। যুদ্ধে গিয়ে তিনি ফ্রান্সের স্টাফ অফিসার হিসেবে নিযুক্ত হন। পিতার সুযোগ্য পুত্র মহারাজকুমার হিতেন্দ্র নারায়ণ মহাযুদ্ধে বীরত্বের পরিচয় দেন। যুদ্ধে নিজস্ব পারদর্শিতার স্বীকৃতিস্বরূপ সম্মানিত হন এবং তৎকালীন বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় মার্চ মাসে তার বীরত্ব প্রদর্শন নানা ভাবে তুলে ধরা হয়। ফিল্ড মার্শাল স্যার জন. ডি. পি .ফ্রান্স ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দের ৩১মার্চ সংবাদ মাধ্যমে হিতেন্দ্র নারায়ণের যুদ্ধক্ষেত্রে নানা বীরত্বব্যঞ্জক কথা প্রকাশ করেন। ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের ১মার্চ তৎকালীন Secretary of state of War later prime minister of England উইনস্টন চার্চিল, যুদ্ধ অফিস থেকে হিতেন্দ্র নারায়ণ সম্পর্কে যে প্রশংসাসূচক পত্রখানি প্রেরণ করেছে তা নিম্নরূপ :-
Coat of arms .
The war of 1914-18
Honorary Lieutenant Hitendra Narayan, Maharaj Kumar of Cooch Behar, was mentioned in a dispatch from Field Marshal Sir John D. P French, C. C. B. O. M. G. C, K. C. M. G dated 31st May 1915 for gallant and distinguished services in the field. I have eating command from the king to the record his majesty’s high appreciation of the service rendered.
Winston Churchill
Secretary of the state of war
War office
White Hall S.W.
1st March 1919.
যুদ্ধে সাফল্যের পর মহারাজকুমার ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বরে কুচবিহারে ফিরে আসেন। রাজ্যের প্রজাগণ তাকে বীরের মর্যাদায় সংবর্ধনা দেন। ওই আর্থিক বছরে ১৯১৪-১৫ মহারাজা জিতেন্দ্র নারায়ণ বাহাদুর মহারাজকুমার হিতেন্দ্র নারায়ণের পদমর্যাদার পরিচয়ে় কিছু তকমা ঘোষণা করেন।
১) ডঙ্কা সজ্জিত একটি ঘোড়া।
২) দুজন সোয়ারী
৩) একজন নিশান বাহক
৪) একজন খাস বরদার।
৫) একজন ভাপলা বরদার।
৬) একজন স্বর্ণ আসা বরদার।
৭) একজন স্বর্ণ বললাম বরদার।
৮) একজন স্বর্ণ চামর ধরা।
৯) একজন হাবিলদার সহ ১৬ জন সিপাহী।
১৯১৮-১৯ খ্রিস্টাব্দে রাজ্যের সেনাবিভাগ, পাতলাখাওয়া শুটিং ক্যাম্প এবং খেলার জন্য সংরক্ষিত বন মহারাজ কুমার হিতেন্দ্র নারায়ণের নিয়ন্ত্রণে ছিল। তিনি রাজ্যের সেনা বিভাগের কমান্ডার নিযুক্ত হন।
স্বল্পকালীন রোগভোগের পর ১৯২০ খ্রিস্টাব্দের ৭ নভেম্বর দার্জিলিংয়ে মহারাজকুমার যৌবনে অবিবাহিত অবস্থায় ইহলোক ত্যাগ করেন মাত্র ৩০ বছর বয়সে। তার এই স্বল্প জীবনে শান্ত, রুচিশীল ব্যক্তিত্ব, ভালো খেলোয়াড় এবং বীর যোদ্ধা হিসেবে ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তার চিতাভস্ম প্রথমে রাজবাড়ির বাগানে এবং পরে কেশব আশ্রম এ সসম্মানে সমাহিত করা হয়। স্মৃতিবেদীও করা হয়। তার মৃত আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে রাজ্যে স্কুল-কলেজ অফিস-আদালত প্রভৃতি বন্ধ রাখা হয়। উত্তরাধিকারী না থাকায়, ১৯২০ সালের ২২ শে নভেম্বর ভাই ভিক্টর নিত্যেন্দ্র নারায়ণ হিন্দু মতে শ্রাদ্ধ করেন। পদমর্যাদা অনুযায়ী গার্ড অফ অনার দেওয়া হয়।
১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে মহারাজা জগদ্দীপেন্দ্র নারায়ণ কুচবিহার শহরে অবস্থিত পাটাকুড়ার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত গোলবাগানটিকে সংস্কার করে ছোট কাকা স্বর্গত হিতেন্দ্রনারায়ণের নামে নামাঙ্কিত করে উৎসর্গ করেন। বাগানের পশ্চিমদিকের প্রবেশপথের ডানদিকের পাকা খুঁটিতে সাদা মার্বেল পাথরের উপর খোদাই করা আছে, Hitendra Narayan Park, Cooch- Behar 1940 । এই পার্কের পূর্ব দিকের রাস্তাটি হিতেন্দ্র নারায়ণ রোড নামে পরিচিত।
কুচবিহারের এই কর্মযোগী সন্তানদের নশ্বর দেহ পঞ্চভূতে বিলীন হয়ে গেছে। কিন্তু তাদের দ্বারা লালিত প্রতিষ্ঠানগুলির সঠিক লালন-পালন, সক্রিয়তাই তার প্রতি কুচবিহারের মানুষের যথার্থ শ্রদ্ধার্পণ হত। আমাদের দুর্ভাগ্য, সেই প্রচেষ্টার সার্থক রূপায়ণ সুদূর পরাহত।
তথ্যসূত্র :- হরেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরীর ” The Cooch Behar State and its Land Revenue Settlement” গ্রন্থের বাংলা অনুবাদ এবং অভিজিৎ রায়ের কোচবিহার রাজ জ্ঞানকোষ থেকে সংগ্রহীত।