আঈ মাটি, আঈ ভাষা সংস্কৃতি। ভাস্বতী রায়

VSarkar
আঈ ভাষা সংস্কৃতি

আঈ মাটি, আঈ ভাষা সংস্কৃতি - চেনো নিজক

লেখাইয়া- ভাস্বতী রায়

হবার পাঞ ৫০০ বছর আগোত মোর পূর্ব পুরুষ কোচ জাতীর মানষি আছিল। মেচ ও হবার পাঞ। ধীমাল, থারু, জালিয়া-ও হবার পাঞ।

কিন্তু মুই রাজবংশী। কামরূপ কামতা-র ভূমিজা। মোর মৈদ্দে ঐন্য কামরূপী মূলীয় মানষির নাখান কিরাত/মোঙ্গলয়েড প্রভাব আছে। তেমুনে দক্ষিণ ভারতের দ্রাবিড় মানষির নগতো সাংস্কৃতিক মিল আছে। হামার হুদুমার নাখান উমারো আসে মারিয়াম্মা। কামাক্ষ্যার মতন উমার লজ্জা গৌরী। সাইটোল বিষহরীর নাখান উমার মঞ্চাম্মা। হামার গঙ্গাডেবীর পূজার নাখান উমারো আছে নদী পূজার সংস্কৃতি। শাক্যমুনির পূর্বাশ্রমের নাখান বৃক্ষ বন্দনা হামার বট পাখিরির বিয়াও, জিঞা সই জিঞা গছ, গছের গোরোত মাটি দেওয়া। সিন্ধু সভ্যতার পশু পতির নগত হামার শিব/ মহাকালের কতঞ মিল। আরো মাথাত মৈষের শিং পিন্ধি বসি থাকা উত্তর পূর্ব ভারতের যে কুন দলপতির নগতো মিল। ঘর দ্যাও ঠাকুরটা আরো বোলে কোচ সংস্কৃতির নগত হুবহু মিল। হামার মাহাবারিকের বাদে নিবুদ দেওয়া ভার, হামার কার্তিক পূজার নগত মিন পৌন্ড্র দেশের। হামার ভাষাৎ আছে পালি প্রাকৃত বিধৌত মগধের সংস্কৃতি। হামার মেখেলি, ফোতা, বুকুনি আর উড়ানির রূপ দেখাযায় দক্ষিণ পূব এশিয়ার দেশ লাতো। আরো দক্ষিণ ভারতের পুরান ছবি দেখিলেও আজিকার পাটানি মত পোষাক পিন্ধা নারীর ছবি পাবেন। হামার ডাবরী বাঋ আর দক্ষিণ পূব এশিয়ার ডাবরী বাঋর ফারাক খুবে কম। ছেকা ক্ষার দিঞা আন্দা শাক আনাজী পাতি গোটাল দক্ষিণ পূব এশিয়ার খাবারের মতন। হামার তেলানী টা উমারে মতন, কিন্তু হামার বাগারটা বোল দক্ষিণ ভারতের মত।

ভাষাত, সংস্কৃতিত, খাওয়া খাইদ্যত, রক্ত কতয় মিশ্ৰণ। কিন্তু মিশ্ৰণ হয় নাই মাটিটাত। হামার কামরূপ কামতার ইতিহাস অবিমিশ্রিত। প্রাগজ্যোতিষ, জ্যোতিষদ্যাশ, কামরূপ, কামতা হৈতে এলকার বৃহত্তর কোচবিহার তার সংস্কৃতি ধঋ থুইসে।

কিন্তু এই মাটির ইতিহাস একেলায় রাজবংশীরে ইতিহাস নাহয়। কামরূপ কামতা মূলীয় সকল ‘দেশী’ মান্ষির। কোচেরো, মেচোরো, থারুরো, ধীমালেরো, রাভারো, বোড়োরো। নাথোক বাদ দিলে, নাথ সাহিত্য দর্শনোক বাদ দিলে রাজবংশী কুন ঠে চরক শিখিল, তুক্ষা শিখিল তার উত্তর কাঞ দিবে? পালোক বাদ দিলে মাগধান ভাষার শিপা বাদ দিলে কাথা কোমো কেংকঋয়া? (বস্তুত বৌদ্ধ পাল শাসক ঘর মাগধান ভাষার এতিয়া উন্নতি কঋসে যে মাগধান ভাষার নামে হঞা যাঞ পালি) এই পাল সাম্রাজ্যে হামারে আত্রাই এর ধাধিনাত। বর্তমানে বাংলাদেশোত। হামার জালিয়া লা যে সপ্তম শতিকার কৈবর্ত রাজা ভীমের উতোর সূরী তাক বাদ দিঞা দিনাজপুরের রাজবংশীর সংস্কৃতির বিকাশ কুন্ঠে? কেমন কঋ হৈল? হামার দেশী মোসোরমানোক বাদ দিলে হামার সত্যপীর, তোর্ষা পীর আর হামার নোবে? হামার মুসলিম বিয়ার গানলা কামতা সাহিত্য থাকি বাদ দেওয়া যাবে? হামার নাউয়া সমাজ গেরামের পঞ্চ এর একঝন। উমাক ছাড়া একটা অনুষ্ঠান হয় হামার? বামন পাছোত, আগোত নাউয়া। বিয়া বাড়িত মূল আকৰ্ষণ এক সামাই ছিল নাউয়া। নানান খান কিচ্চা, গোপন গূঢ় কাথা শুনি দিসিল নাউয়া কাথার ছলে। শিলোকের আরে। নাউয়া সর্বত্র গতি। সৌগঠে যাঞা গুপ্তচরের কামটা উমা ভালে কঋসে। কামরূপী বামনোক ছাড়িলে হামার মধ্যযুগীয় সাহিত্য, বৈষ্ণবীয় দর্শন হামার থাকিবে? অধিকারী, দেউশি তো হামার আপন রক্ত। খেন ঘরোক বাদ দিলে হামার ইতিহাস বাদ যাবে না? গোসানীমারী? গোসানী মঙ্গল? তিলি মেলি, বারোই, জোলা কাক্ ফেলাবেন?

হামার পূর্ব পুরুষ কুন ধর্ম বর্ণ জনগোষ্ঠী হাতে আসিসে ঐটা এলা অপ্রয়োজনীয় আলোচনা।

মাথা মোটা আরগান্ডু ব্রিটিশে স্কেল দিঞা মানষির নাক মাপিয়া, চখু খাড়া না বেকা, ওঠ সরু না মোটা, দেহার চাম কালা না গোরা দেখিয়া ভারতীয় লাক বিভাজন কঋসে। যেলা যেই নাল মুখা বান্দর আইচ্ছে সেলা তায়।

কিন্তু ঐ ব্রিটিশ বা ব্রিটিশের ঠ্যাং চাটা লা জানে না মাষান থানোত কামতার হেন্দু আর মোসোমান এক্কে নগতে সেবা দেয়। উমা জানে নাই, পত্তিটা রাজবংশী গেরাম থানোত পীরের থান থাকে। শিব কালির নগত দিবসী, বছরকি, পারোনী সেবা পায়।জানে নাই জালিয়ায় আর রাজবংশীএ এখে নগত মাছ ধরে গান কয়। নাথের গান না হৈলে হামার আগ সিড়ির মানষির মন বেজার হৈসে। জানেনাই পালের ভাষা, দর্শন হামা সমানে সমানে ভাগ কঋ চলি।

কার দেহাত কত শতাংশ মোঙ্গলয়েড অক্ত, কার দেহাত কতলা দ্রাবিড় অক্ত, কায় আর্য বংশোদ্ভূত ঐলা অন্ষে কায় কার থাকি আলদা ঐটায় জানির পাবেন।

কামরূপ কামতার ইতিহাসের তাতে ক্ষতি। কামরূপ কামতার জীবণ দর্শনের তাতে ক্ষতি। পৃথিবীত কেবল কামরূপ কামতার মাটিত জাতি ধর্ম বর্ণ লিঙ্গ দর্শন অর্থনীতি খাদ্য পোষাক ইত্যাদির বাদে ভেদভাব না আছিল। কেবল এই জাগাত প্রজা বিদ্রোহের ইতিহাস না আছিল। কেবল এই জাগাত রাজরোষে প্রজার যন্ত্রণা না আছিল। প্রকৃত অর্থে প্লুরাল কালচার। কিন্তু সোনার কামরূপ কামতার বদলি গেইল ব্রিটিশের কুস্পর্শ পায়া। আর ব্রিটিশের ঠ্যাং চাটিবেরা লার দ্বারা।

বেশ কিছু দিন যাবত রাজবংশীর উপর রাগ বা হিংসা বা অভিমান কঋয়া পোষ্ট দেখিতে দৈখিতে মনে হৈল কামরূপ কামতার জীবণ দর্শন হীন সমাজত যে রাইজ্য পুনরুদ্ধার হবে তা রাজবংশী অধ্যুষিত আর রাজবংশীর উপুরা অভিমানী এই দুই ভাগে বাটা এক রাজনৈতিক ক্ষেত্ৰ হবে খালি।

কামরূপ কামতার ইতিহাসের বাদে এক হও। রাজবংশী মেলা ডাং খাইসে। মঋসেও মেলা। মরেছে, খুন-ধর্ষণ হসে। চিহ্নিত হঞা আছে মেলা রাজবংশী। কেবল কামতা-র বাদে কাম কঋর যাঞা। হুমকি, গাইলা এইলা তো মামুলি। ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ তকমাটা কেবল রাজবংশীরে গাত নাগে দেয়। সোসাল মিডিয়া হাতে ঘাটায় পথে ঐ রাজবংশীএ। গাইলাইলেও খালি রাজবংশীরে গাত নাগে। বাকিলার কুনয় না হয়। কামতাপুরী রা নক্শাল এদের গুলি করা উচিত’ জাতীয় কথা কাহো কৈলে একেলায় রাজবংশীএ কেনে? বাকি ‘দেশী’ লা কি কামতাপুরী নাহন?

নিজ মাক ছাড়ি যাঞ ভেক নিঞা আছেন তোমা কর্তব্য কর্ম কর। ভেক ছাড়ি নিজ মাওয়ের লাজ রৈক্ষা কর। রাজবংশী সঙ্গে তাল না মিলির হলে নিজের ঘাটা নিজে নিকলাও। তাও কামরূপ কামতার নামে নিজের পরিচয় দেও।

ফম থুবেন ডাং যাঞ খায় তায়ে অধিকার ছিনি নেয়। তা সেই রাজবংশীর মূল কোচ হৌক কি মেচ কি বোড়ো কি ক্ষত্রিয়।