লকডাউনে গত কয়েকদিন যাবৎ মদের দোকান খোলার কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনা শোনা গেছে। গরীব পরিবারগুলির যেখানে নিত্যসামগ্রী জিনিসপত্র কেনার সামর্থ্য নেই সেখানে চড়া দামে মদ কিনছে সেই সকল পরিবারের কিছু মাদকাসক্ত ব্যক্তি। মদ নিয়ে কালোবাজারি হচ্ছে শিলিগুড়ি তথা জেলার বিভিন্ন জায়গায়। ময়নাগুড়ি, শিলিগুড়ি সহ অনেক জায়গায় কিছু বেআইনি ভাবে মদের দোকান খোলা রাখা হয়েছে। যদিও সাধারন সচেতন মানুষের চাপে বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। এবার কথা হল মদ যদি লোক না পান করত তাহলে মদ কোম্পানিও থাকত না আর এইরকম কালোবাজারি, বেআইনি ভাবে দোকান খোলার কথাই আসত না। মানুষের প্রয়োজনে মদের কোম্পানি হয়েছে যা আবার কিছু মানুষের সর্বনাশের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমান মহামারী (COVID-19) পরিস্থিতিতে এই মদের কোম্পানি গুলোই আবার জীবন রক্ষক হয়ে উঠেছে। সরকার এই মদের কোম্পানি গুলোকে অ্যালকোহল তৈরী করার বরাদ্দ দিয়েছে যা সুপার হ্যান্ড স্যানিটাইজার হিসাবে কাজ করে। আসামে লকডাউন ঘোষণা করার আগেই 5টা সংস্থাকে 200ml বোতলের 5 কোটি বোতল হ্যান্ড স্যানিটাইজার সরবরাহ করার অনুমতি দিয়েছিল এবং পরবর্তীতে আরো 6টি কোম্পানি কে অনুমতি দেওয়া হয়।
বিপদের সাথী মদ
70% আইসো প্রোপাইল অ্যালকোহল / ইথাইল অ্যালকোহল দিয়ে হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরী করা হয়। 70% অ্যালকোহলই বা কেন 100% অ্যালকোহল নয় কেন? অনেক সাধারন শিক্ষিত মানুষ এইটাই মনে করে যে পিওর 100% অ্যালকোহল জীবাণু কীটাণুকে সমূলে উৎপাটন করবে। কিন্তু ব্যাপারটা তা নয়। মাইক্রোবায়োলোজিতে ফেনল কোএফিসিয়েন্ট (phenol coefficient) নামে একটা শব্দযুগল আছে যা দিয়ে কোনো পদার্থের জার্মিসাইডাল এফেক্ট মাপা হয়। প্রসঙ্গত ফেনলের জার্মিসাইডাল এফেক্ট “1” ধরা হয়। 70% এর কম অ্যালকোহল সলুসন হলে ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার বাইরের লিপিড লেয়ার ঠিকঠাক ডিসল্ভ করতে পারে না। আবার 100% অ্যালকোহল হলে প্রোটিন কভারকে coagulate করে যা অ্যালকোহলকে RNA/DNA ভাঙতে বাধা দেয়। 70% অ্যালকোহল ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার বাইরের লিপিড লেয়ার ডিসল্ভ করে ভিতরের প্রোটিন স্ট্রাকচার ভেঙে দেয়।
যাইহোক, প্রায় 5 লক্ষ লিটার হ্যান্ড স্যানিটাইজার এই 11 টা কোম্পানি মিলে সরবরাহ করবে। ITC কোম্পানিও হিমাচল প্রদেশের পারফিউম ফ্যাক্টরিতে সব বাদ দিয়ে এখন হ্যান্ড স্যানিটাইজার বানাবে।
সুতরাং বলা যেতে পারে মদ কোম্পানিগুলোর উপর বিভিন্ন সময়ে গালাগালি হলেও বিপদের সময় ওরাই বেশী কাজে লাগছে।
# itc hand sanitizer, COVID-19, # spirit company