জন্ম সন: 1272, 1লা ফাল্গুন, সোমবার, শিবরাত্রির দিন, সকাল 7:30 মিঃ
জন্ম স্থান: খলিসামারী, মাথাভাঙ্গা, রাজ্য কুচবিহার ।
ইংরাজী সন: 13 ফেব্রুয়ারি 1866
পিতা: শ্রী খোসাল সরকার, মাতা: চম্পলাদেবী
রায়সাহেব ঠাকুর পঞ্চানন বর্মার কর্মজীবন
স্বর্গীয় ক্ষেত্রনাথ সিংহ (বি এল, এম এল এ) মহাশয় তাঁর “রায়সাহেব পন্চানন বর্মার জীবনী” বইটিতে বর্ণিত (27/06/1939) ওঁনার কয়েকটি লাইন তুলে ধরলাম-“হায় ভাই ক্ষত্রিয়, এখন আমরা যাই কোথায়? এতদিন আমরা যে দেশকে আমাদের জাতির লীলাভূমি বলীয়া জানিতাম, যে সমস্ত রাজ রাজড়াকে আমাদের জাতীয় গৌরব মনে করিতাম এবং কামরুপ, গোসানীমারি, ভবচন্দ্রের পাট, গোপীচাঁদ এবং ময়নামতীর গড়, ভীমের জঙ্গল প্রভৃতি পুরাকীর্তিগুলিকে আমাদের নিজস্ব বলিয়া দাবী করিয়া আসিতেছিলাম এখন তাহাই আবার আমাদেরই অবহেলায় অন্যে দখল করিবার প্রয়াস পাইতেছে, অথচ আমরা নির্ব্বিকার। পন্চানন বর্মার জীবনে পুরাকীর্তি উদ্ধারের এই আকাঙ্ক্ষা দেখিতে পাই।
তাঁহার তিরোধানে তাঁহার আরব্ধ অসমাপ্ত কার্য্য সমাপ্ত করিবার ভার ভবিষ্যৎ আশা ভরসার স্থল ক্ষত্রিয় যুবকবৃন্দ স্বেচ্ছায় গ্রহণ করিবেন ইহা কি আমরা আশা করিতে পারি না? “
ক্ষেত্রনাথ সিংহ মহাশয় এ কথাও লিখেছেন যে আমাদের সার্বিক আলস্য এবং আগ্রহহীনতা রয়েছে। ওঁনার পর্যবেক্ষণ অস্বীকার করার মত নয়। উনি লিখেছেন-” আমাদের জাতির দুর্ভাগ্য এই যে উত্তরবঙ্গের তথা আমাদের ক্ষত্রিয় জাতির বিষয় অনেক কিছু লিখিবার এবং অনুসন্ধান করিয়া সংস্কৃতি উদ্ধারের অনেক বস্তু থাকিলেও আমাদের আলস্য ও আগ্রহহীনতা আমাদিগকে বিদেশীর অনুগ্রহভিখারী করিয়া রাখিয়াছে।”
কারা এই বিদেশী? যাইহোক এটা বিষয় নয়।
ঠাকুর পঞ্চানন বর্মা যে সময়কালে প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে শিক্ষা লাভ করে পরবর্তীতে উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য বাড়ির গন্ডী থেকে বেড়িয়ে আসেন সেই সময় শিক্ষার অবস্থা খুবই ভয়ন্কর ছিল। ইংরেজী শিক্ষা তখনো কুচবিহার রাজ্যে প্রসার লাভ করেনি। যদিও মহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়ণ প্রাণপণে প্রজাদিগকে ইংরেজী শিক্ষায় শিক্ষিত করবার জন্য বিশেষ চেষ্টা করছিলেন।শিক্ষার প্রসার বিষয়ে অনেকে মহারাজাদের এই ভূমিকা মানতে চায়না যা ঠিক নয়।
ঠাকুর পন্চানন বর্মা এন্ট্রান্স পাশ করে কুচবিহার থেকে আই. এ ও বি. এ পাশ করেন। তারপর অতিকষ্টে কলকাতা থেকে এম. এ পাশ করেন। দক্ষতার সঙ্গে এম. এ পাশ করেও নিজের জায়গায় ভাল চাকরী সংগ্রহ করতে না পেরে কুচবিহার কলেজ ও বোর্ডিং এ সামান্য বেতনে বোর্ডিং সুপারিন্টেন্ডেন্টের পদ গ্রহণ করেন। কুচবিহার রাজ্যের দেওয়ান কালিকাদাস দত্ত মহাশয়ের কাছে নায়েব আহিলকার পদের জন্য আবেদন করলেও তার অতিশয় কুচবিহারী বিদ্বেষী মনোভাবের জন্য পন্চানন বর্মার আবেদন পত্র নাকচ করেছিলেন এবং শুধু তাই নয় কুচবিহার থেকে পন্চানন বর্মাকে তাড়াবার জন্য তাঁকে মাথা পাগল লোক বলে প্রচারও করেছিলেন।পরবর্তীতে ঠাকুর পঞ্চানন বর্মাকে কুচবিহার থেকে বিতাড়িত করা হয়।
অনেকে রাজাকে দোষারোপ করে যে রাজাই বিতাড়িত করেছিলেন পন্চানন বর্মাকে। কিন্ত আমার মনে হয় ব্যাপারটা ঠিক এরকম নয়। দেওয়ান কালিকাদাস দত্ত যে বিদ্বেষী মনোভাবের বীজ পুঁতেছিলেন তা সময়ের ব্যবধানে মহীরূহে পরিনত হয়েছিল! দেশীয় (Aboriginals) মানুষকে বুঝতে হবে কারা প্রকৃতপক্ষে বিদ্বেষী মনোভাব পুষ্ট করে এখনো। আর শত্রুকে কখনো দূর্বল ভাবতে নেই সে বাইরে থেকে যতই দূর্বল মনে হোক।
ঠাকুর পঞ্চানন বর্মা 1901 সালে কুচবিহার থেকে রংপুরে এসে ওকালতি শুরু করেন। যদি আহিলকার পদের চাকরী পেয়ে যেতেন হয়ত কোচ রাজবংশী সমাজ তিমিরেই থাকত, পন্চানন বর্মাও ঠাকুর পঞ্চানন বর্মা হয়ে উঠতেন না।
স্বর্গীয় ক্ষেত্রনাথ সিংহ মহাশয় রাজবংশী জাতির ইতিহাস লিখতে গিয়ে রাজা কান্তেশ্বর, বীর চিলা রায়, মহারাজা নরনারায়ণ ইত্যাদি কোচ রাজবংশী রাজাদের নাম উল্লেখ করেছেন। “চিলা রায় তাঁহার শক্তিশালী রাজবংশী সৈন্য লইয়া অদম্য বিক্রমে গৌড় বাদশাহ হোসেন সাহকে পরাস্ত, গৌড় নগর ধ্বংস-বিধ্বংস এবং বাদশাহকে নতজানু হইয়া ক্ষমাভিক্ষা করিতে বাধ্য করিয়াছিলেন।” আমরা সবাই জানি কোচ রাজা নরনারায়ণের ভ্রাতা তথা সেনাপতি হল বীর চিলারায়। অথচ আমরা এই আধুনিক সোসাল মিডিয়ার যুগে বসবাস করেও কোচ আর রাজবংশী নিয়ে বিভেদ সৃষ্টি করি অযথা তর্ক করে সময় নষ্ট করি যা কুপমন্ডুকতার লক্ষণ।
1901 সালে ঠাকুর পঞ্চানন বর্মার রংপুরে যাওয়ার আগেই হরমোহন খাজান্চী মহাশয় ক্ষত্রিয় আন্দোলন শুরু করেন অর্থাৎ রাজবংশীরা ক্ষত্রিয় এটা সেনসাস রিপোর্টে লেখার দাবী তোলেন। 1317 সালের 18ই বৈশাখ রবিবার রংপুর নাট্যমন্দিরে ক্ষত্রিয় সমিতির প্রথম অধিবেশন আরম্ভ হয়। এই অধিবেশনে প্রায় 400 লোকের সমাগম হয়।
ক্ষত্রিয় আন্দোলনের সময় 5টা প্রস্তাবের অন্যতম হল দ্বিতীয় প্রস্তাব – রাজবংশী ও কোচজাতি দুইটি পৃথক জাতি ইহা গভর্নমেন্ট কে জানানো।
কোচ জাতি এই নামটা বা শব্দটা ঐ সময়ে প্রতিষ্ঠিত। অর্থাৎ সরকার বা এথনোলোজিস্টদের কাছে আগের থেকেই লিপিবদ্ধ ছিল এই কোচ শব্দটা। রাজবংশী শব্দটা সেই অর্থে কিন্ত নতুন সৃষ্টি। নামের থেকে বড় কথা হল ক্ষত্রিয় আন্দোলনের যিনি প্রথম আহ্বায়ক ওঁনার আর তার সহযোগী কিছু ব্যক্তিবর্গের ভাষা, কৃষ্টি ও সংস্কৃতি। যদি কোচ আর রাজবংশীর ভাষা কৃষ্টি ও সংস্কৃতি মিলে যায় তাহলে নাম দিয়ে কি যায় আসে। তাছাড়া তিওর রাজবংশী বলে একটা জাতি আছে যাদের দক্ষিণবঙ্গে বসবাস। সেইসময়ে কিছু ব্যক্তিবর্গের তিওর রাজবংশী যোগসূত্র থাকাটা সম্ভব কিনা বলা মুশকিল।
ক্ষত্রিয় সমিতির প্রথম সভার অন্য প্রস্তাবনার মধ্যে ছিল-
ধনভান্ডার স্থাপন:
প্রথম সভাতেই মোট 960 টাকা সংগৃহীত হয়।
ছাত্র নিবাস:
14700 টাকা ব্যয়ে 32জন ছাত্র বাসের জন্য পাকা বাড়ি নির্মিত হয়। (এই সভার পৃষ্ঠপোষক ছিলেন মহামহোপাধ্যায় শ্রীযুক্ত যাদবেশ্বর তর্করত্ন মহাশয়।)
উপনয়ন গ্রহণ :
জলপাইগুড়ির দেবীগন্জের করতোয়া নদীর তীরে। যা দেবীগন্জের মিলন ক্ষেত্র নামে পরিচিত। “27শে মাঘ নির্ব্বিঘ্নে মিথিলা, কামরুপ ও নবদ্বীপের বিখ্যাত পন্ডিত মহাশয়গণের অধ্যক্ষতায় উপনয়ন সমাপ্ত হয় এবং সম্পাদক পঞ্চানন বর্মা তাঁহার মাতা চম্পলা দেবীর নিকট ভিক্ষা গ্রহণ করেন। “
রংপুর কলেজ ও ক্ষত্রিয় সমিতি:
রংপুর কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য গুপ্ত সাহেব (মিঃ জে এন গুপ্ত, আই সি এস, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ) 25 হাজার টাকা চেয়েছিলেন কিন্তু অন্যান্য জেলার ক্ষত্রিয়গণের বিরোধিতায় সমিতি থেকে কোনো সাহায্য দেওয়া হয়নি।
জার্মান যুদ্ধ:
1322 সালে গোয়ালপাড়া থেকে 400/450 ক্ষত্রিয় সৈন্য যোগ দেয়। করাচীর সেনাধক্ষ্য পন্চানন বর্মার নিকট স্বেচ্ছায় লিখিলেন “The men of this (Kshatrya) Community make better soldiers than most of others.”
সাহিত্য সেবা :
ঠাকুর পঞ্চানন বর্মার বঙ্গ সাহিত্যে দান যথেষ্ট। শ্রীযুক্ত সুরেন্দ্র চন্দ্র রায় চৌধুরী মহাশয় ঠাকুর পঞ্চানন বর্মার সহযোগিতায় “উত্তরবঙ্গ সাহিত্য পরিষদ” প্রতিষ্ঠা করেন। ছিল্কা স্বাধীন কামরুপ বা কুচবিহার রাজ্যের গ্রাম্য ভাষায় রচিত তা উদ্ধার আর প্রচারের জন্য অশেষ যত্ন ও চেষ্টা করেছিলেন।
ক্ষত্রিয় পত্রিকা :
অশিক্ষিত ক্ষত্রিয় সমাজ প্রচলিত সংবাদপত্রের খবর রাখেনা।তাদের গ্রামের বাইরেও যে বিশাল জগৎ আছে এবং দৈনিক কিছু না কিছু ঘটতে চলেছে তার খবর রাখে না। ক্ষত্রিয় সমাজের জন্য রায়সাহেব “ক্ষত্রিয়” নামে এক মাসিক পত্রিকা চালু করেছিলেন।
ক্ষত্রিয় ব্যাঙ্ক :
1320 সালের সাধারন সভায় রায়সাহেব ঠাকুর পঞ্চানন বর্মা একটি ব্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠার জন্য প্রস্তাব তোলেন ক্ষত্রিয় সমাজকে অর্থনৈতিক ভাবে এগিয়ে যাওয়ার জন্য। রংপুর টাউনে উপযুক্ত ক্ষত্রিয় না থাকায় সেখানে ব্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠিত হয়নি। কিন্ত 1327 সালে ক্ষেত্রনাথ সিংহ মহাশয় কুড়িগ্রাম থেকে রংপুরে ওকালতি করতে আসলে ওনার উদ্যোগেই পরবর্তীতে ক্ষত্রিয় ব্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠিত হয়।
লাইব্রেরী :
শাস্ত্র প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে তিনি একটি লাইব্রেরির অভাব অনুভব করে যত্নপূর্বক একটি ছোট্ট লাইব্রেরী স্থাপন করেছিলেন।
ডাংধরী মাও
নিদ্রিত ক্ষত্রিয়কে জাগিয়ে তোলার আকূল আগ্রহে রায়সাহেব ঠাকুর পঞ্চানন বর্মা বিহ্বলমনা হয়েছিলেন, বৃদ্ধবয়সে যুজনচিত ভাব “ডাংধরী মাও” রুপে কবিতায় কাব্যে প্রকাশ পেয়েছিল। পুরুষ যদিও ডাকে সাড়া দিচ্ছিলনা কিন্তু মহাশক্তির অংশরুপা নারী জাতি জেগে উঠল নারীর আর্ত্তনাদে-
“চমকি উঠিল ডুকরণ শুনি, ডাংধরী মোর মাও।
দিশাদুওর নাই খালি কোল্লহার, দেখে সংসারের ভাও।।
সোয়ামীর কোলা, বাপ ভাইর ঘর, আর যেইটে নারী থাকে।
জোর করিয়া নুচ্ছাগুন্ডায় নিয়া যাইতেছে তাকে।।
বেটা ছাওয়ালা উঠিয়া আইসে, ফ্যাল্ ফ্যাল্ ফ্যাল্ চায়।
ডাংধরী মাও, কোর্দ্ধে হাকি, গাইন ধরিয়া ধায়।।
বেটা ছাওয়ার প্রতি-
ছিকো ছিকো রে মরা বেটা ছাওয়া, ধিক্ ধিক্ তোক্ ধিক
মাও বইনক তোর পরে নিগায়, তেঞো থাকিস্ তুই ঠিক।
আরে মরদ্ মরদ্ কওলাইস রে তুঞি কেমন তোর মর্দানি।
কেবল পাথার বাড়ী হাতে আসি, মাইয়ার আগত কেরদানী?
লাজ নাই তোর, হিয়াও নাই তোর, বল্ নাই তোর ধড়ে।
এই বাদে তোক টেপো বউ ছিকো ছিকো করে।।
কেবল দুষ্টাদমন মোকদ্দমায়, ফিরে না ধরম মান।
ভাঙ্গি নুচ্ছার হাড়, মাও বইনের রক্ষা, বাপের বেটার কাম।।
রাখির না পারিস, মাও মাও বইনক যদি আপন বাহুবলে।
পাপের বোঝা বইছিল মাও তোর, এই দশা তার ফলে।। “
ডাংধরী মায়ের ডাকে যখন নিদ্রিত পুরুষ যখন জাগল না, মানুষ উঠল না, তখন কে অত্যাচারিত কে রক্ষা করে! হতাশ হয়ে” ডাংধরী মাও” ক্ষাত্র শক্তিকে ডাকতে লাগলেন।
আয় আয় রে ক্ষত্রিয়গুলা, তোমাক ডাকোং বারম্বার।
তোমার কান নাই কি, অন্তর নাই কি কান্দন শুনবার?
হউক না কেনে দূর দূরান্তর, পর্বত নদী মাঝে।
ক্ষত্রিয় যদি ঠিক হইস তুঞি, তেঞো শুনবু কাছে।।
আতুরা কান্দন ক্ষত্রিয় কানে আপনে আসি নাগে।
হিদ্দে উঠে হুড়কা তুফান, শরীলে শক্তি জাগে।।
ক্ষত্রিয় তখন কি করে! –
“পাঞোএর ডরে পাহাড় ডাঙ্গে, ফিরিয়া না চায় বীর।
দুষ্টাক মারি আর্ত্তক তারি, তবে সে হয় রে থির।।
ক্ষত্রিয় এর ধর্ম্ম কি?
হিন্দু মুসলমান বিচার নাইরে, মানুষ জন্তু নয় ভিন্।
উল্সি ধায়া আর্ত্তের উদ্ধার, এই ক্ষত্রিয়ের চিন।।
বিপদ ঝন্ঝাট যতএ আইসে, ততএ উলসে চিত।
আপন বলে বিপদ দমায়, আর গায় ইষ্টের গীত।।
ক্ষত্রিয় নামটা শক্তি সমূদয়, ভগবানও যাক চায়।
সেই নামের এই দশা দেখিয়া হিয়া ফাটিয়া যায়। ।
পন্চানন বর্মার শেষজীবন ও মৃত্যু
মৃত্যুর কয় বছর আগের থেকেই ঠাকুর পঞ্চানন বর্মা সাংসারিক অভাব অভিযোগে বিশেষ কষ্ট পেয়েছিলেন। কুচবিহার রাজ্য থেকে অবিচারে 5 বছর বহিস্কৃত হওয়ার জন্য সংসারের কোনো শৃঙ্খলা রক্ষা করতে পারেন নি। একমাত্র পুত্র শ্রীমান পুষ্পজিত বর্মন বহু চেষ্টা করেও বি. এ পাশ করতে না পারায় তিনি মনে বড় আঘাত পেয়েছিলেন। তিনি ছিলেন সংযমী চরিত্রের। উদারতা আর মহত্তগুণে তাঁহার চরিত্র আরো মনোরম হয়ে উঠত। তিনি নির্ভীক ও স্পষ্ট বক্তা ছিলেন। ক্ষত্রিয় সমিতিকে তিনি প্রাণের সহিত ভালো ভাসতেন এবং দিনরাত সমাজের কিভাবে উন্নতি করা যায় সেই চিন্তায় করতেন।
1935 সালের জলপাইগুড়িতে সমিতির বার্ষিক অধিবেশনের ব্যবস্থার সময় অর্থ সংগ্রহের জন্য গ্রামে গ্রামে ঘুরে এবং অতিরিক্ত পরিশ্রমের দরুন শরীর খারাপ হয়ে যায়। অধিবেশনের কাজ শেষ হওয়ার পরে পরেই তিনি ভীষণভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন ও কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হন। কিন্ত ডাক্তারদের চেষ্টা ও অন্যান্যদের আন্তরিক শুশ্রষা সত্বেও রক্তহীনতা ও পক্ষাঘাত রোগে অবস্থা ক্রমশ খারাপের দিকে যেতে থাকে। মোটামুটি 20/22 দিন রোগ যন্ত্রণা ভোগের পর ইংরেজি 1935 সালের 9 সেপ্টেম্বর তারিখে মেডিক্যাল কলেজেই দেহত্যাগ করেন। তাঁহার মৃত্যু উপলক্ষে কলকাতা ও বিভিন্ন জেলায় বহু শোক সভার অনুষ্ঠান হয়েছিল।
তথ্যসূত্র: রায়সাহেব পন্চানন বর্মার জীবনী/ শ্রী ক্ষেত্রনাথ সিংহ
Video: A Tribute to Roy Saheb Thakur Panchanan Barma [Collected]
Watch VideoVideo Posted by Partha Sarathi Roy on Friday, September 8, 2017